নিজস্ব প্রতিবেদক :: চকরিয়া পৌরসদরের প্রকাশে গরু মহিষ জবাই করে মাংস বিক্রি ও ভাগভাটোয়ারা করা হলেও প্রশাসনের ভূমিকা ছিল রহস্যজনক। চকরিয়া পৌরসদরের কাচাঁবাজারে এখনো চলছে মাংস বিক্রির উৎসব।
কক্সবাজার শহরের বাহারছরাসহ বিভিন্ন জায়গায় সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে গরু জবাইয়ের পর মাংস বিক্রির আজ বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) সকাল থেকে বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের পরপরই অভিযানে নামে জেলা প্রশাসনের চৌকস টিম।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাঃ শাজাহান আলির নির্দেশে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লাভলি ইয়াসমিন ও বিধান কান্তি হালদারের নেতৃত্বে প্রশাসনের টিমটি প্রথমে বাহারছরা মসজিদের দক্ষিণ পাশে হান্নান এপার্টমেন্টে পৌঁছেন।
সেখানে গরু জবাই ও বিক্রির অনেক চিহ্ন তারা পান। যদিওবা ততক্ষণে মাংস ভাগবাটোয়ারা ও বেচাবিক্রি শেষ।
এপার্টমেন্টের মালিকের পক্ষে কামরুল হাসানের কাছে জানতে চান, শবেবরাতে গরু জবাই না করার বিষয়ে প্রশাসনের নির্দেশনা কেন অমান্য করেছে? কোন সদুত্তর নেই।
অবশেষে কামরুলকে নগদ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লাভলি ইয়াসমিন।
এরপর শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসনের এই টিম।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নতুন কাউকে জরিমানার খবর পাওয়া যায় নি।
তবে, প্রশাসনের টিম মাঠে সক্রিয় রয়েছে।
পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে গরু জবাই না করতে বুধবার (৮ এপ্রিল) নির্দেশনা জারি করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন।
সামাজিক দূরত্ব বজায় ও জনসমাগম ঠেকাতে প্রশাসনের নির্দেশনা অনেকে মানে নি।
এদিকে চকরিয়া পৌরসদরের চিরিঙ্গা কাঁচা বাজারে কসাইরা প্রকাশ্যে ২১টি গরু জবাই করে বেচাবিক্রি হলেও সেখানকার প্রশাসন কোনো অভিযানে নামে নি বলে জানা গেছে। এছাড়াও হালকাকারা ২নং ওয়ার্ডে অসংখ্য গরু মহিষ জবাই করে ভাগভাটোয়ারা করা হলেও প্রশাসন ছিল নিদ্রায়। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এখনো গরু মহিষের মাংস বিক্রি চলছে হরদম।
তবে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুদ্দিন মোহাম্মদ শিবলী নোমান থানার ওসিকে অভিযানে পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কক্সবাজার শহরের বাহারছরা, নতুন বাহারছড়া, বিমানবন্দর এলাকা, নতুন জেলখানা, পাহাড়তলী, কলাতলী, খরুলিয়া নুর মোহাম্মদ চৌধুরী বাজার, উখিয়ার মরিচ্যা, ঈদগাঁও বাস স্টেশন, পেকুয়ার রাজাখালী, চকরিয়ার চিরিঙ্গা কাঁচাবাজার, খুটাখালীসহ অনেক জায়গায় গরু জবাই করেছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে বেচাকেনাও হয়েছে।
উখিয়ায় মরিচ্যায় কসাইদের বাড়ি বাড়ি দীর্ঘ লাইন দেখেছেন স্থানীয় বাসিন্দা সংবাদকর্মী এ এইচ সেলিম উল্লাহ।
পিএমখালী থেকে এম আই চৌধুরী জানিয়েছেন, নুর মোহাম্মদ চৌধুরী বাজারে পাঁচটি গরু জবাই হয়েছে। বিক্রিও ভালো হয়েছে।
খরুলিয়ার চিত্র একটি বলে জানিয়েছেন সেখানকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ফয়সাল।
হানা বাবুলের বাড়িতে (মোকতারকুল জামে মসজিদের সামনে) সফর মিয়া ও মোকতার নামে দুই ব্যক্তি গরু জবাই করেছে।
উখিয়া থেকে আব্দুল্লাহ আল আজিজ, ইনানী থেকে আব্দুল হামিদ খান, ঈদগাঁও থেকে নুরুল হুদা, খুরুশকুল থেকে মোহাম্মদ বেলাল উদ্দীনসহ অনেকে মুঠোফোনে জানিয়েছেন, গত রাতে এবং আজ সকালে প্রচুর পরিমাণ গরু জবাই হয়েছে।
প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্যকারীদের খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লা।
পাঠকের মতামত: